Kamala Harris: নারী ভোটে এগিয়ে থাকবেন কমলা, এমনটাই বলছে বিভিন্ন জরিপ! সিলেট প্রতিদিন সিলেট প্রতিদিন প্রকাশিত: ২:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৪ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুয়ের্তো রিকোকে ‘ভাসমান জঞ্জাল’ বলে কমলা হ্যারিসের হাতে এক ‘উপহার’ তুলে দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্যে পেনসিলভানিয়ার পুয়ের্তো রিকো থেকে আসা মানুষদের অসন্তোষ স্পষ্ট। সে আগুন নেভার আগেই এবার কমলার জন্য নতুন এক উপহার নিয়ে হাজির হলেন ট্রাম্প। গত বুধবার উইসকনসিনে এক সভায় ট্রাম্প বলেন, তারা পছন্দ করুক বা না-করুক, তিনি নারীদের রক্ষা করবেন। তাঁর উপদেষ্টারা বলেছিলেন, এ ধরনের কথা অশোভন, তাই না বলাই ভালো_ একথা ট্রাম্প স্বীকার করে বলেন বলেন, ‘ আমি তো প্রেসিডেন্ট, দেশের নারীদের আমি রক্ষা করতে চাই। তারা চান বা না চান, আমি তাদের নিরাপদে রাখব।’ নারীদের নিয়ে এর আগেও ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেছিলেন। তিনি নিজে তিনটা বিয়ে করেছেন, একাধিক নারীতে আসক্ত হয়েছিলেন। তাঁর তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়া যখন এক সন্তানের মা, তখন এক পর্নো তারকার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান ট্রাম্প। ২০১৬ সালে নির্বাচনে ফাঁস হওয়া ভিডিওতে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, তিনি একজন স্টার, তাই তিনি মেয়েদের সাথে যা খুশি করতে পারেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বিভিন্নভাবে কমলাকে আক্রমণ করেছিলেন, তাঁকে নির্বোধ, দূর্বল ইত্যাদি বলেও গালি দিতেন ট্রাম্প। তাঁর সমর্থকদের অনেকেই কমলাকে দেহোপজীবনী বলেও বাজে মন্তব্য করেন। এমন চরিত্রের ট্রাম্প নিজেকে নারীদের রক্ষক দাবি করে বিপদে পড়েছেন। নারীদের মতে, ট্রাম্পের হাত থেকেই মেয়েরা রক্ষা পায়না, তিনি কিভাবে মেয়েদের রক্ষা করবেন। এর আগে তিনি কখন, কিভাবে নারীদের প্রতি কি আচরণ করেছিলেন, কেমন মন্তব্য করেছেন সবই তা নতুন করে খুঁচিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কমলা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প নিজের আচরণ আর কথাতেই স্পষ্ট করেছেন, তিনি নারীদের স্বাধীন অধিকার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশ্বাস রাখেন না। এবারের নির্বাচনে নারীদের গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নারীদের এই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যা দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পূর্বতন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তকে তাঁর একটি বড় সাফল্য হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে তিনজন রক্ষণশীল বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছেন। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের জন্য একটি বড় ঝুঁকি হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নারী এবং অনেক পুরুষই গর্ভপাতের অধিকার সংরক্ষণের পক্ষে। আগামী নির্বাচনের আগে ট্রাম্প এই বিষয়ে তাঁর অবস্থান নরম করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু এই চেষ্টা সফল হবে বলে মনে করা হচ্ছে না। কারণ, গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে তাঁর অতীতের অবস্থান জনগণের মনে গভীর ছাপ রেখেছে। গর্ভপাতের প্রশ্ন ব্যবহার করে ২০২২ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের সমর্থনকারী ‘লাল ঢেউ’ ঠেকানো গিয়েছিল। কমলা হ্যারিস আশা করছেন, এবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। বিভিন্ন জরিপে প্রাপ্ত প্রমাণ অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে যে, তার এই আশা ভিত্তিহীন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার প্রায় ৫০.৫০ শতাংশই নারী, তাই ভোটারের সংখ্যায় নারীরা এগিয়ে আছে ৫৩ শতাংশ। এছাড়া, পুরুষের ভোট দেয়ার গড় হার যেখানে ৬৫%, সেখানে নারীদের ভোট দেয়ার হার প্রায় ৭০%। এবারের নির্বাচনে গর্ভপাতের অধিকার বিষয়টি নারী ভোটারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষিত, শহুরে ও শহরতলির নারীরা এই বিষয়ে কমলা হ্যারিসের মতামতের সাথে আরো বেশি সহমত হচ্ছেন। বিভিন্ন জরিপের ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, এবার নারী ও পুরুষ ভোটারদের মধ্যে সমর্থনের পার্থক্য (জেন্ডার গ্যাপ) আগের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় অনেক বেশি হবে। অনুমান করা হচ্ছে, এই পার্থক্য ১৬% বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে। কিছু দোদুল্যমান রাজ্যে, যেমন পেনসিলভানিয়া, এই পার্থক্য আরও বেশি হয়ে ২৫% ছাড়িয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, পুরুষ ভোটারদের মধ্যে, বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ ও কম শিক্ষিত পুরুষদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বেশি। এই গোষ্ঠীর ভোটাররা কমলা হ্যারিসের তুলনায় ট্রাম্পকে ৯-১০% বেশি ভোট দিতে পারে। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, যদি জরিপের ফলাফল সঠিক হয়, তাহলে নারী ভোটারদের সমর্থনের মাধ্যমে কমলা হ্যারিস পুরুষ ভোটারদের মধ্যে এই পার্থক্য কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হতে পারেন। নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, কমলা হ্যারিস মিশিগান ও উইসকনসিনে ২ শতাংশ বা তার চেয়ে অধিক ব্যবধানে এগিয়ে আছে। কিন্তু, ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হলে কমলাকে পেনসিলভানিয়ার ১৯টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। এই রাজ্যে ট্রাম্পের তুলনায় কমলার সমর্থনে নারী ভোটার ১২ শতাংশ বেশি। ভোটারের তুলনা করলে পাওয়া যায়, ৫৫ % বনাম ৪৩ %। আবার অন্যদিকে ট্রাম্পের সমর্থনকারী পুরুষ ৫৪ শতাংশ এবং কমলার সমর্থনকারী ৪৪ শতাংশ। যদিও এই পরিসংখ্যান থেকে ভোটের প্রকৃত হিসাবটি পাওয়া যাবে না তাই এখানে মোট ভোটারের সংখ্যা এবং ভোট দেয়ার হার জানতে হবে। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের এক নির্বাচনী বিশ্লেষণ হতে পাওয়া তথ্য মোতাবেক, ২০২০ সালের নির্বাচনে ৫৩% নারী ভোটার এবং ৪৭% পুরুষ ভোটার ছিল। ব্রুকিংস আরও জানাচ্ছে, যদি নারী ও পুরুষ গতবারের মত একই হারে ভোট দেন, তবে ট্রাম্পের চেয়ে কমলা ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৯৪ ভোটে এগিয়ে থাকবেন। এই অঙ্গরাজ্যে ২০২০ সালের নির্বাচনে ‘জো বাইডেন’ ৮১ হাজার ৬৬০ ভোটে জিতেছিলেন। মিশিগান ও উইসকনসিনের মতো দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে কমলা হ্যারিসের সমর্থন নারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। জরিপ অনুযায়ী, মিশিগানে ৫৬% নারী এবং উইসকনসিনে ৫৬% নারী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেন। সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি সিলেট প্রতিদিনসত্যের খোঁজে প্রতিদিন Share this post: Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp প্রচ্ছদ বিষয়: