ঠাকুরগাঁওয়ে সুইট কর্ন চাষে সোহেলের চমক,১০ শতাংশে রেকর্ড আয়

প্রকাশিত: ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৫

হাসিনুজ্জামান মিন্টু (ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি):

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের ভান্ডারা এলাকার কৃষক সোহেল রানা মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের মিষ্টি ভুট্টা বা সুইট কর্ন চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পরীক্ষামূলক এই উদ্যোগে তিনি পেয়েছেন আশানুরূপ ফলন ও ভালো মুনাফা।

 

উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা এবং মাল্টিন্যাশনাল এক্সপোর্ট কোম্পানি ‘স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’-এর তত্ত্বাবধানে সোহেল রানা এই সুইট কর্ন চাষ শুরু করেন। মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে জমি থেকে ৩০ মন ভুট্টা সংগ্রহ করে,কেজি প্রতি ১২ টাকা হারে মোট ১৪ হাজার ৪০০ টাকার ভুট্টা বিক্রি করেছেন তিনি। নিজের খরচ হয়েছে মাত্র আড়াই হাজার টাকা।

 

সোহেল রানা বলেন,“সরাসরি জমি থেকেই কোম্পানির প্রতিনিধিরা ভুট্টার মোচা কিনে নেওয়ায় বিক্রির কোনো ঝামেলা নেই। ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে আমি ৫০ শতক জমিতে এই ভুট্টা চাষ করব।”

 

এই উদ্যোগ দেখে আশেপাশের কৃষকরাও মুগ্ধ। প্রতিবেশী কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল খালেক জানান,অল্প সময়ে বেশি ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় তারাও আগামী মৌসুমে এই ভুট্টা চাষে ঝুঁকবেন।

 

স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ফিল্ড অফিসার মির্জা আসাদুজ্জামান বলেন,“সুইট কর্ন চাষে সময় লাগে অর্ধেক,ফলন বেশি। প্রতি বিঘায় ১১৫ থেকে ১২০ মন উৎপাদন সম্ভব। আমরা সবুজ মোচা সরাসরি কৃষকের জমি থেকে কিনে তা প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করি।”

 

সুইট কর্ন শুধু লাভজনকই নয়,বরং পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন,পটাসিয়াম, ভিটামিন-সি,আঁশ ও প্রোটিন। ভুট্টার মোচা সিদ্ধ,ভাজা,স্যুপ কিংবা পপকর্ন হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় সংগ্রহ করা ভুট্টার গাছ থেকে আবার সাইলেজ তৈরি করে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

 

রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহীদুল ইসলাম জানান,“সোহেল রানার সফল চাষ দেখে অনেক কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন। সুইট কর্ন চাষ বাড়ালে শুধু কৃষক লাভবান হবেন না,বরং এটি একটি বড় রপ্তানি সম্ভাবনাও তৈরি করবে।”

 

বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে সুইট কর্ন হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনার নাম—এই সফলতা তা প্রমাণ করেই দিলো।

সিলেট প্রতিদিন/এসডি.