HSC Result: এইচএসসি ফলাফলে অসঙ্গতি, শিক্ষা বোর্ডের ব্যাখ্যা সিলেট প্রতিদিন সিলেট প্রতিদিন প্রকাশিত: ১:৪৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২৪ শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানঃ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলনে নেমেছে। তাদের মূল দাবি হলো, সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ায় অটোপাস বা অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোর ফলের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফলাফল প্রকাশ করা। তবে শুধুমাত্র ফলাফল প্রকাশের পদ্ধতিকে কেন্দ্র করেই এই আন্দোলন নয়। অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মাদ্রাসা থেকে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে আসা শিক্ষার্থীরা, ফলাফলে অসঙ্গতি ও ত্রুটির অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি এসএসসি পাশ করা অনেক শিক্ষার্থীও এই অভিযোগ করেছেন। শিক্ষা প্রশাসন এই অভিযোগগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষা বোর্ডগুলো শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফলের অসঙ্গতির অভিযোগ জানানো শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও, শিক্ষা প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে এই বছর এইচএসসি পরীক্ষা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার পর আন্দোলনের কারণে বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হয়েছিল। ফলে বাকি বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিং-এর মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে। ফাতেমা আক্তার নামে একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী তার ফলাফল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে দাখিল পরীক্ষা পাশ করে গাজীপুরের সরকারি কালিগঞ্জ শ্রমিক কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ফাতেমা জানান, তার দাখিলের ফলাফল অনুযায়ী তিনি আকাইদ ও ফিকহতে এ প্লাসসহ বেশিরভাগ বিষয়ে ভালো নম্বর পেয়েছিলেন। কিন্তু এইচএসসিতে সামাজিক কর্ম, পৌরনীতি ও সুশাসন এবং ইসলামের সংস্কৃতি ও ইতিহাস বিষয়ে তার সি গ্রেড এসেছে, যা তার মতে, তার দাখিলের ফলাফলের সাথে মিলছে না। তিনি মনে করেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের সময় তাকে এই বিষয়গুলোতে আরও ভালো গ্রেড দেওয়া উচিত ছিল। ফাতেমা আক্তারের মতো অনেক শিক্ষার্থীই এইচএসসি ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট এবং বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন এমন দুই শিক্ষার্থী তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। মো. রনি মোল্লা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে দাখিল পরীক্ষা পাশ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি জানান, দাখিলে তিনি বেশিরভাগ বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছিলেন। কিন্তু এইচএসসিতে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের ফলে পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ে তিনি এ মাইনাস পেয়েছেন, যা তার মতে, তার আগের ফলাফলের সাথে মিলছে না। অন্যদিকে, ঢাকা বোর্ডের আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি এসএসসিতে কৃষি বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছিলেন। কিন্তু এইচএসসিতে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ে বি গ্রেড পেয়েছেন। তার মতে, কৃষি বিষয়ের জ্ঞানের কারণে তাকে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণনে ভালো গ্রেড দেওয়া উচিত ছিল। উভয় শিক্ষার্থীই সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে বৈষম্য হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের মতে, তাদের আগের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করে তাদের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়নি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাসার জানিয়েছেন, এইচএসসি ফলাফলে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আসা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তাদের নজর রয়েছে। দাখিল ও এইচএসসির বিষয়গুলোর মিল না থাকায় সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের সময় কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দাখিলের গণিত বিষয়ের ফলকে এইচএসসিতে ব্যবহার করা হয়েছে, যা অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় কম শিক্ষার্থীকে প্রভাবিত করেছে। তিনি আরও বলেন, সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফল প্রক্রিয়াকরণের কারণে কিছু অসঙ্গতি দেখা দিতে পারে। তবে হাতে করে ফল প্রক্রিয়া করতে অনেক সময় লাগতো, যা তাদের কাছে ছিল না। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, এত বড় সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশ করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে তারা চান যে, কোনো শিক্ষার্থীই এই প্রক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়েছেন, যদি কেউ তার ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট হন তবে শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ জানাতে পারেন। বোর্ড তাদের অভিযোগ যাচাই করে দেখবে এবং প্রয়োজনে ফলাফল পরিবর্তন করার ব্যবস্থা নেবে। সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি সিলেট প্রতিদিনসত্যের খোঁজে প্রতিদিন Share this post: Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp শিক্ষাঙ্গন বিষয়: