Extinction of pollinators: পরাগায়কদের বিলুপ্তি, খাদ্য উৎপাদনের এক বড় হুমকি – বিস্তারিত বিশ্লেষণ সিলেট প্রতিদিন সিলেট প্রতিদিন প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২৪ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্কঃ পৃথিবীর খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় পরাগায়ণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মৌমাছি, ভোঁবরা, প্রজাপতিসহ নানা ধরনের কীটপতঙ্গ ফুল থেকে ফুলে উড়ে বেড়িয়ে পরাগরেণু বহন করে। এই প্রক্রিয়াতেই ফুল থেকে ফল বা শস্য উৎপন্ন হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এই পরাগায়কদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার, বাসস্থানের ক্ষতি এবং বিভিন্ন রোগ এই কীটপতঙ্গদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরাগায়কদের কমে যাওয়ার ফলে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, ফলের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে এবং বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা বিপন্ন হচ্ছে। পরাগায়কদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ: জলবায়ু পরিবর্তন: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, অতিবৃষ্টি বা খরা, এবং অন্যান্য আবহাওয়াগত পরিবর্তন পরাগায়কদের বাসস্থান এবং খাদ্য উৎসকে প্রভাবিত করে। কীটনাশকের ব্যবহার: কৃষিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পরাগায়কদের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই রাসায়নিক পদার্থগুলি পরাগায়কদের স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং তাদের মৃত্যু ঘটায়। বাসস্থানের ক্ষতি: শহরায়ণ, বন ধ্বংস এবং কৃষি জমির বিস্তারের ফলে পরাগায়কদের বাসস্থান ধ্বংস হচ্ছে। ফলে তাদের খাদ্য এবং আশ্রয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে। রোগ: বিভিন্ন ধরনের রোগ, যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী, পরাগায়কদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাদের সংখ্যা কমিয়ে দেয়। জেনেটিক বৈচিত্র্যের হ্রাস: একই প্রজাতির পরাগায়কদের সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে তাদের জেনেটিক বৈচিত্র্য হ্রাস পায়। ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত চাপ সহ্য করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। পরাগায়কদের বিলুপ্তির ফলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে: ফসলের উৎপাদন হ্রাস: পরাগায়কের অভাবে ফুল পরাগায়িত হতে পারে না, ফলে ফল বা শস্য উৎপাদন কমে যায়। ফলের গুণগত মান হ্রাস: পর্যাপ্ত পরাগায়ণ না হলে ফল ছোট হয়ে যায়, বীজের সংখ্যা কমে যায় এবং ফলের স্বাদও নষ্ট হয়। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি: ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। জীববৈচিত্র্য হ্রাস: পরাগায়করা খাদ্য শৃঙ্খলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের বিলুপ্তি অন্যান্য প্রাণীর উপরও প্রভাব ফেলবে এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাবে। সমাধান: জৈব কীটনাশকের ব্যবহার: রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে পরাগায়কদের ক্ষতি কমাতে হবে। বাসস্থান সংরক্ষণ: পরাগায়কদের জন্য বাসস্থান তৈরি করতে হবে, যেমন ফুলের বাগান, বন সংরক্ষণ ইত্যাদি। জৈব কৃষি পদ্ধতি: জৈব কৃষি পদ্ধতি পরাগায়কদের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সচেতনতা বৃদ্ধি: মানুষকে পরাগায়কদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। গবেষণা: পরাগায়কদের বিলুপ্তির কারণ এবং সমাধান খুঁজে বের করতে আরও গবেষণা করতে হবে। পরাগায়কদের বিলুপ্তি একটি গুরুতর পরিস্থিতি। এই সমস্যা মোকাবেলায় সবার যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সরকার, গবেষক, কৃষক এবং সাধারণ মানুষ সকলকেই এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং পরাগায়কদের সংরক্ষণে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের বাড়িতে ফুল চাষ করে, কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে এবং পরাগায়কদের জন্য বাসস্থান তৈরি করে এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা শুরু করতে পারি। এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলি মিলে আমরা পরাগায়ণ প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ভবিষ্যতে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি। সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি সিলেট প্রতিদিনসত্যের খোঁজে প্রতিদিন Share this post: Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp প্রচ্ছদ বিষয়: