সত্যজিৎ দাস:
প্রেম এবং ভালোবাসা সাধারণত দেহের সাথে সম্পর্কিত,তবে তা শুধুমাত্র শারীরিক নয়,বরং মানসিক,আত্মিক এবং অনুভূতিগতভাবে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে।
দেহের উপস্থিতি এবং শারীরিক সম্পর্ক প্রেম বা ভালোবাসার অংশ হতে পারে,কিন্তু প্রকৃত প্রেমের গভীরতা অনেক বেশি। প্রেমের মূলত আত্মিক ও মানসিক সংযোগ,যেখানে দুই জনের হৃদয়,চিন্তা ও অনুভূতি একে অপরের প্রতি একাগ্র থাকে।
এজন্য বলা যেতে পারে,প্রেম বা ভালোবাসা দেহের বাইরে,অন্তর এবং মানসিক স্তরে একটি অভ্যন্তরীণ অনুভূতি। তবে বর্তমানে শারীরিক উপস্থিতি প্রেমের অভিব্যক্তির একটি অংশ ও চলমান ছেলে-মেয়েদের প্রেম চক্রের মূল ধারা হিসেবে রুপ নিয়েছে।
একজন মানুষ পৃথিবীতে শরীর ও তার সাথে পাঁচটি ইন্দ্রিয় ছাড়া জন্মায় না। সুস্থ মানুষের জৈবিক চাহিদা থাকবেই। তাই শারীরিক সম্পর্ক ভালোবাসার সম্পর্কের একটি অংশ। তবে এটি সম্পর্কের একমাত্র বা মূল ভিত্তি নয়। ভালোবাসা মূলত আত্মিক,মানসিক এবং অনুভূতিগত সংযোগের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
যখন দুইজনের মধ্যে গভীর বিশ্বাস,শ্রদ্ধা,সহানুভূতি, এবং একে অপরের প্রতি ভালোবাসা থাকে,তখন সম্পর্ক শক্তিশালী হয়,এমনকি শারীরিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও। তবে তা খুবই বিরল।
ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা আসা একটি প্রাকৃতিক মানবিক অনুভূতি। তবে,এটি খুবই ব্যক্তিগত বিষয় এবং দুইজনের পারস্পরিক সম্মতি,শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করে।
যখন শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা আসে,তখন তাদের উচিত নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখাঃ-
১) সম্মতি এবং শ্রদ্ধা:
শারীরিক সম্পর্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে, দুজনেরই পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং সম্মতির কথা স্পষ্টভাবে জানানো উচিত। একে অপরের অনুভূতি এবং সীমাবদ্ধতাকে সম্মান জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২) খোলামেলা আলোচনা:
সম্পর্কের গভীরতা এবং সীমা সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করা উচিত। দুজনেরই কি আরামদায়ক এবং ঠিক মনে হয়, সেটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।
৩) সুরক্ষা:
শারীরিক সম্পর্কের সময় নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য বিষয়েও সচেতন থাকা উচিত। যৌন স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কনডম বা অন্য কোন নিরাপদ পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।
৪) মানসিক প্রস্তুতি:
শারীরিক সম্পর্কের আগে মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া জরুরি। দুইজনেরই একে অপরকে বুঝে, তাদের সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন।
৫) এথিক্যাল এবং আইনি বিষয়:
সম্পর্কের বয়স এবং আইনি সীমা অনুযায়ী, দুজনের সম্পর্কটি সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। যদি তারা যথার্থ বয়সে না থাকে, তবে শারীরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত না হওয়া উচিত।
এভাবে ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক চাহিদার প্রসঙ্গ আসলে,সেটি অবশ্যই পারস্পরিক সম্মতি,খোলামেলা আলোচনা এবং সুরক্ষার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। কিন্তু এই আধুনিক যুগে তা হচ্ছে না,উল্টো প্রতিদিন ঘটে চলেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
মনে রাখতে হবে,সম্পর্কের স্থায়িত্ব এবং ভালোবাসার গভীরতা নির্ভর করে দুইজনের আন্তরিকতা,যোগাযোগ এবং একে অপরকে বোঝার ক্ষমতার ওপর। যদি সেই মানসিক ও আবেগিক সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে ওঠে,তবে শারীরিক সম্পর্কের অভাব সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণ হবে না।
সিলেট প্রতিদিন/এসডি.