ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের আনন্দযাত্রা রূপ নিল শোকে। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঝিনাইদহের শৈলকুপার দম্পতি দিলীপ কুমার (৪২) ও সাধনা রানীসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছে তাদের একমাত্র কন্যা,৬ বছরের আরাধ্যা।
বুধবার (০২ এপ্রিল) ভোরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন দিলীপ,তার স্ত্রী ও মেয়ে আরাধ্যা। পথিমধ্যে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দিলীপ ও সাধনা।
ঝিনাইদহের শৈলকুপার বোয়ালিয়া গ্রামে দিলীপের বাড়ির আঙিনায় স্বজন ও এলাকাবাসী অপেক্ষায়,কখন আসবে মরদেহ। কিন্তু বাড়ির প্রধান ফটক তালাবদ্ধ,শোকের ভারে নীরব সবাই। দিলীপের বাবা-মা ও বোনরা গ্রামের বাড়িতে না থাকায় কাঁদারও কেউ নেই।
দিলীপের কাকাতো ভাই পলাশ কুমার জানান,“দুর্ঘটনার খবর শুনে আমরা খোঁজ নিতে শুরু করি। জানতে পারি,দিলীপ আর সাধনা আর নেই,শুধু ছোট্ট আরাধ্যা বেঁচে আছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে তার চিকিৎসা চলছে।”
দিলীপের বন্ধু শোভন কুমার কাজল বলেন,“মরদেহগুলো আনার প্রক্রিয়া চলছে। ছোট্ট আরাধ্যার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।”
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন দিলীপ:
দিলীপ কুমার ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি গাজীপুরের টঙ্গীতে থাকতেন। ১৫ বছর বাইয়িং হাউসে চাকরি করার পর নিজেই ব্যবসা শুরু করেন। তার তিন বোন বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন,বাবা-মা ছেলের ও মেয়েদের বাড়িতে ঘুরে বেড়াতেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে,দুর্ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত করে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়,পুরো গ্রামের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে রইল। আরাধ্যার ভবিষ্যৎ কী হবে,সেটিই এখন সবার বড় প্রশ্ন।
সিলেট প্রতিদিন/এসডি.